কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে তা জানার আগ্রহ অনেকের। সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলে আমাদের শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করে। তবে ভিটামিন ডি আপনি খাবারেও পেতে পারেন। দুগ্ধজাত খাবার, চর্বিযুক্ত মাছ, ডিম এবং মাশরুম ইত্যাদি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার। ভিটামিন ডি স্বাস্থ্যের জন্য একটি অপরিহার্য পুষ্টি। ভিটামিন A, E, এবং K এর পাশাপাশি, ভিটামিন ডি হল একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন। ভিটামিন ডি হজম ট্র্যাক্ট ভিটামিনকে খাদ্যের চর্বি সহ রক্ত প্রবাহে পাঠাতে শোষণ করে। সেখান থেকে ভিটামিন ডি পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য যকৃত এবং ফ্যাটি টিস্যুতে জমা হয়।ভিটামিন ডি এর মূল পুষ্টি আপনার স্নায়ু, পেশী, এবং ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করে এবং ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে তা সম্পর্কে আরও জানুন।
কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে
স্যামন মাছ: স্যামন মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি। একটি ৩-আউন্স স্যামনে রয়েছে ১০ থেকে ১৮ এমসিজি ভিটামিন ডি। এছাড়াও স্যামন ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভাল উৎস, যার অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
মাশরুম: ভিটামিন ডি এর আরো একটি উৎস হলো মাশরুম। মানুষের মতো, মাশরুমেরও অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি তৈরি করার ক্ষমতা থাকে। তবে, মাশরুমগুলো সাধারণত অন্ধকারে জন্মায় এবং এতে ভিটামিন থাকে না। তাই মাশরুম কেনার সময় প্যাকেটে ভিটামিন ডি স্তর বা ক্রমবর্ধমান অবস্থার উল্লেখ রয়েছে কিনা তা দেখতে প্যাকেটজাত মাশরুম কিনুন।
ডিমের কুসুম: ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার এর আরো একটি ভালো উৎস হলো ডিমের কুসুম। ডিমের বেশিরভাগ প্রোটিন সাদা অংশে পাওয়া যায় এবং চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গুলো বেশিরভাগই কুসুমে পাওয়া যায়। একটি বড় ডিমের কুসুমে ৩৭ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে। প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।
গরুর দুধ: দুধ ক্যালসিয়াম আর প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন ডি’য়ের একটি ভালো উৎস। এক কাপ গরুর দুধে রয়েছে ১১৫ আইইউ ভিটামিন ডি।
টুনা মাছ:স্যামন মাছের মতো টুনা মাছেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি।টিনজাত 3.5-আউন্স টুনামাছে রয়েছে ২৬৯ পর্যন্ত আইউ ভিটামিন ডি।
ভিটামিন ডি কম হলে লক্ষণসমূহ
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে বেশির ভাগ মানুষেরই তেমন কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না । আবার অনেকের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন ক্লান্তি, ভালো ঘুম হচ্ছে না,হাড়ের ব্যথা, হতাশা বা দুঃখের অনুভূতি,চুল পড়া,পেশী দুর্বলতা,ক্ষুধা কমে যাওয়া,চামড়া ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। যদি এই লক্ষণগুলো আপনার মধ্যে পরিলক্ষিত হয় তবে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। প্রয়োজনে আপনাকে রক্ত পরীক্ষা করা লাগতে পারে। উপরের রোগগুলো এড়িয়ে চলতে হলে জানতে হবে কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে।
ভিটামিন ডি এর অভাবের জন্য কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?
কালো রংয়ের লোকেরা অতিবেগুনী রশ্মি থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে তবে একই পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি করতে সাদা রংয়ের লোকদের তুলনায় রোদে বেশি সময় কাটাতে হয়। নন-হিস্পানিক কৃষ্ণাঙ্গদের সাধারণত ভিটামিন ডি-এর অভাবের হার বেশি থাকে। আপনার ত্বক যত কালো হবে, সূর্যের আলো থেকে আপনি তত কম ভিটামিন ডি তৈরি করবেন। যারা স্থূলকায়, যাদের অস্টিওপোরোসিস আছে এবং যারা ম্যালাবসর্পশন ডিজঅর্ডার যেমন সিলিয়াক ডিজিজ বা প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত তাদেরও ভিটামিন ডি-এর অভাবের ঝুঁকি রয়েছে। আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন যে আপনার ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম আছে এবং আপনি এটি সম্পর্কে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এছাড়া এই সব ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে তা জানা জরুরী।
সুস্থ হাড় বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল নিয়মিত বাইরে সময় কাটানো, নিশ্চিত করা যে বাহু, মুখ এবং পায়ে সূর্যের আলো স্পর্শ করছে। এছাড়াও আপনার খাদ্যতালিকায় আপনি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যোগ করতে পারেন৷